ডেস্ক মিরর, মস্কো : ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার অগ্রশনকে কেন্দ্র করে প্রথম থেকেই রাশিয়ার ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে পশ্চিমি দেশগুলো। তবে তাতেও পিছু হটেনি রাশিয়া। কিন্তু এবার আরও বড়োসড়ো চাপের মুখে পরল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও তার পরিবার।
সম্প্রতি বুচার নাশকতা প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই আরও কোণঠাসা করা হচ্ছে রাশিয়াকে। এদিন ন্যাটোর সদস্য দেশগুলি ব্রাসেলসে একটি বৈঠকে বসে। আর এই বৈঠকে এদিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রাশিয়ার ওপর আরও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে। এদিনের বৈঠকেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ঘোষণা করেছে, রাশিয়া থেকে তারা 430 কোটি ডলারের কয়লা আমদানি স্থগিত রাখছে। শুধু এখানেই শেষ নয় আমেরিকার তরফে জানানো হয়েছে, রাশিয়া ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর একাধিক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপ বাড়ানো হচ্ছে। শুধু পুতিন নয় পুতিনের ঘনিষ্ঠদের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে বাদ পড়েনি পুতিনের স্ত্রী ও তার দুই প্রাপ্তবয়স্ক কন্যা ক্যাটরিনা ও মারিয়া। এমনকি এই নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে রুশ বিদেশ মন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও তার স্ত্রী এবং কন্যা। এখানেই শেষ নয় এই তালিকায় রয়েছে রুশ নিরাপত্তা কাউন্সিলের সদস্যরা। প্রাক্তন প্রধান মন্ত্রী এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও। সুতরাং এর থেকে পরিষ্কার হয়ে উঠেছে বড়সড় অর্থনৈতিক ধাক্কার মুখে পড়তে চলেছে রাশিয়া।
তবে এই বৈঠক আরও তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে তার কারণ , ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এতদিন বারবার দাবি করা সত্ত্বেও কেউই রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে রাজি হয়নি। রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে চায়নি আমেরিকাও। কিন্তু বুচার ঘটনা সবাইকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এই ঘটনার পরেই এবার নড়েচড়ে বসেছে ইউরোপ-আমেরিকার ন্যাটো। সূত্রের খবর, সামরিক সাহায্য করতে রাজি হয়েছে তারা। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো কিছু স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়নি।
সম্প্রতি হওয়া বুচার ঘটনায় স্তম্বিত গোটা বিশ্ব। দীর্ঘদিন রুশ সেনার দখলে থাকা এই শহরটি থেকে বর্তমানে রুশ সেনা সরে গিয়েছে। এবং তারপরে এই শহরে ঢুকতেই দেখা যায় ভয়াবহ গায়ে কাঁটা ধরানো ছবি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে শহরটিতে কার্যত গনহত্যা চালিয়েছে রাশিয়া। কারও হাত পা বেঁধে গুলি করা হয়েছে আবার কোথাও কারও পিঠে গরম লোহা দিয়ে স্বস্তিক চিহ্ন এঁকে খুন করা হয়েছে। রাস্তাঘাটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে সাধারন মানুষের দেহ। কার্যত মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে গোটা শহর। যার ছবি এবং ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই তা দেখেই শিউরে উঠেছে গোটা বিশ্বের মানুষের।
অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পরে পুতিনের সুর নরম হয় না নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকে রাশিয়া, সেটাই এখন দেখার।