প্রাচীন জনপদ বরানগরের ইতিহাসে রবীন্দ্রনাথ, প্রশান্ত চন্দ্র মহালনাবীশ এর নাম জড়িয়ে রয়েছে। আর তাদের স্মৃতি বুকে দাঁড়িয়ে থাকা বরানগরের শশীভিলার কথা লোকে মুখে মূক-বধির স্কুল বলেই পরিচিতি।
২৬৫/১৯ গোপাল লাল ঠাকুর রোডের সে শশী ভিলার আজ ভগ্ন দশা।
শশী ভিলার জরাজীর্ণ শরীরে আজ বটের শিকড় আঁকড়ে ধরেছে।
মলীন হয়েছে এ বাড়ির দক্ষিন পূর্ব কোনের সেই ঘরে বিশ্বকবির স্মৃতি। ফ্যাকাসে হয়েছে রানী চন্দের কথা।
প্রশান্ত চন্দ্র মহলনাবীশ এর গাড়ির চাকা এ বাড়ির সামনের মাটির লনে যে দাগ ফেলত, তা মুছে গিয়েছে অনেক অনেক বছর আগেই।
এ বাড়ির দক্ষিন পূর্ব কোনের যে ঘর , সে ঘরের নাম কবি দিয়েছিলেন নেত্রকোনা। সে নেত্রকোনায় বসে চলতো কবির একাধিক সাহিত্য সৃষ্টি।
নেত্রকোনা থেকেই দেখা যেত সবুজ ঘেরা পুকুর। আজ সেখানে আগাছা মশার আতুড় ঘর। মাঝে মধ্যে বরানগর পুরসভা সামাজিক কর্তব্য করে বটে। তবে আগাছার আর দোষ কি!
২২ শে শ্রাবণ, কবির চলে যাওয়ার দিনেই দাবি উঠল। শশীভিলার আশু সংস্কার আর ঐতিহ্যের ঘোষনা করতে হবে।
দাবি তুললেন বরানগর নাগরিক প্রতিবাদ মঞ্চের সদস্যরা। তাদের মধ্যে অন্যতম বিশিষ্ট দাবিদার বরানগর গবেষক , সাহিত্যিক দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য।
বরানগর নাগরিক প্রতিবাদ মঞ্চের অন্যতম সক্রিয় সদস্য সুপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছিলেন এটা শুধু মঞ্চের দাবি নয়। অঞ্চলের বিশিষ্ট মানুষরাও চান ,
এ বাড়ির সংস্কার হোক । সরকার “হেরিটেজ” ঘোষনা করুক। তার জন্য সুপ্রিয় বাবুরা ইতিমধ্যে একাধিক কর্মসূচীও গ্রহন করেছেন।
সাহিত্যিক , গবেষক দীনেশ বাবু জানালেন ইতিমধ্যে বিষয় টি নিয়ে
খোঁজ খবর নিয়েছেন বিধায়ক তাপস রায়ও ।
কিন্তু দাবি তোলার আগে অনেক বার সংবাদ মাধ্যমে এ বাড়ির খবর প্রকাশিত হলেও কোনো রাজনৈতিক দল ই বিষয় টিকে আমল দেয় নি। দীনেশ বাবুর কথায় তারা এই দাবি জোড়ালো করতে সই সংগ্রহ শুরু করেই দিয়েছেন।
সঙ্গে বরানগরের প্রতিটা স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের , শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদেরকেও পাশে পাওয়ার চেষ্টা করবেন তাঁরা। ইতিমধ্যে এশিয়াটিক সোসাইটির মতো বিশিষ্ট সংস্থাকেও বাড়ির তথ্য ও দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও সাংসদ, বিধায়ক, রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারকেও তাঁরা তাঁদের দাবি জানাচ্ছেন।